ভারতে করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। প্রায় এক বছরের চেষ্টার পর দেশে এসে গিয়েছে ভ্যাকসিন। দেশজুড়ে শুরু হয়েছে কোভিড টিকাকরণ পরিস্থিতি। করোনা নিয়ে এখন আতঙ্ক অনেকটাই কমেছে। এদিকে ভারত শুধু নিজেদের দেশের নাগরিকদের কথা নয়, প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের কথা ভেবেছে। উপহার হিসাবে তাই বাংলাদেশকে করোনা ভ্যাকসিন দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশই নয়, ভারত ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে ভুটান, মরিশাস, মায়ানমারের মতো দেশে।
এর পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছিল, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানকে কী ভারত করোনা টিকা দেবে? ঘটনা হল, পাকিস্তান এখনও করোনা টিকার জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করেনি। এদিকে সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানকে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে চিন। পাকিস্তানকে করোনা ভ্যাকসিন পাঠানোর প্রস্তাব প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব সাপ্তাহিক নিউজ ব্রিফিংয়ে বলেন, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পাকিস্তানে ভ্যাকসিন পাঠানো সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। পাকিস্তান যদি ভ্যাকসিন চেয়ে ভারতকে অনুরোধ করে, তাহলে ভারত কী করবে? এই প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি হননি বিদেশ মন্ত্রকের আমলা। তবে বর্তমানে এরকম কোনো সম্ভাবনা যে তৈরি হয়নি, সেদিকেই স্পষ্ট ইঙ্গিত করেছেন বিদেশমন্ত্রকের কর্তা।
এদিকে শুক্রবার দুই মিলিয়ন করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ ব্রাজিল এবং মরোক্কোতে পাঠিয়েছে ভারত। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে। এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে সিরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া। এছাড়া আগামী দিনে সৌদি আরবম, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ এবং মায়ানমারে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভারত ভ্যাকসিন পাঠাবে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতের করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বর্তমানে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনের একটি গ্লোবাল হাবে পরিণত হয়েছে ভারত। বিদেশমন্ত্রকের কর্তা শ্রীবাস্তব বলেন, কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিশ্রুতি মানবতার স্বার্থে ব্যবহার করা হবে। ধাপে ধাপে আগামী দিনেও অনেক দেশে করোনা ভ্যাকসিন পাঠাবে ভারত। সেই অনুযায়ী উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বুধবার থেকে ভারত তার বন্ধু দেশগুলিকে সাহায্য হিসাবে ভ্যাকসিন দিতে শুরু করেছে। “ভ্যাকসিন মৈত্রী” উদ্যোগের অধীনে উপকৃত হয়েছে ভুটান (১৫০,০০০ ডোজ), মালদ্বীপ (১০০,০০০ ডোজ), বাংলাদেশ (কুড়ি লক্ষ ডোজ), নেপাল (দশ লক্ষ ডোজ), মায়ানমার (সাড়ে ১০ লক্ষ ডোজ), মরিশাস (১০০,০০০ ডোজ) এবং সেশলস (৫০,০০০ ডোজ)।