সৌরভ দাস
একজন মানুষের প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়া কি অন্যায়ের? না কি যৌনলঘু হওয়া অন্যায়ের? নিজের শরীরে এইচআইভি নিয়ে বেঁচে থাকা কি আরো অন্যায়ের? আপাতত এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজছেন রাজেশ ঘোষ।
শিলিগুড়িতে গ্লোবাল ফান্ডের অন্তর্গত কলকাতার একটি সংস্থার প্রজেক্টে কাজ করতেন রাজেশ ঘোষ (নাম পরিবর্তন)। কোচবিহার জেলার বাসিন্দা, হতদরিদ্র পরিবারের এই সন্তানের নানা শারীরিক অসুবিধা রয়েছে। তিনি রূপান্তরকামী। তার শরীরে রয়েছে মারণবীজ এইচআইভি। রাজেশ ঘোষ ২০১৫ সাল থেকে কাজ করে চলেছেন সেই সব মানুষের জন্যে যারা নিজেদের শরীরে এইচআইভির বীজ নিয়ে বেঁচে আছেন। তাদের এআরটি সেন্টার, অন্যান্য সুযোগ সুবিধার সঙ্গে তিনি পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি জানান, কাজ শুরুর সময় থেকেই স্থানীয় একটি নেটওয়ার্ক সংস্থা তার উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালাচ্ছে। মূল উদ্দেশ্য তাকে কাজ থেকে বের করে নিজেদের কাছের লোককে তার জায়গায় নিয়োগ করা। যখনই তার উপর অত্যাচার হয়েছে তিনি স্থানীয় এলজিবিটিকিউ সাপোর্ট গ্রুপ কে জানাতেন। প্রজেক্ট চালনা করা কলকাতার সংস্থার কাছে গেলে অত্যাচার কিছুদিন বন্ধ থাকত। আবার পুনরায় অত্যাচার শুরু হত। তার যৌন মানসিকতা নিয়ে এবং তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে প্রতিনিয়ত তাকে হেয় করার চেষ্টা চলত বলেও দাবি করেছেন রাজেশ। তার অভিযোগ, এটি যারা করতেন তারাই আবার শিলিগুড়িতে MSM (MALE WHO have sex with Male) TI (targeted intervention) প্রজেক্ট চালান, যা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এইডস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার অন্তর্ভুক্ত।
গত ২২ জানুয়ারি তাকে পরিচালনকারী সংস্থার তরফ থেকে বরখাস্তের চিঠি দেওয়া হয়। রাজেশ সেই চিঠি সই করেননি। তখন তার উপরে শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় একটি নেটওয়ার্কের সদস্যদের বিরুদ্ধে। রাজেশের গায়ে হাত দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। কেড়ে নেওয়া হয় তার ফিল্ড ডায়েরি- ট্যাব। মুখের উপর বন্ধ করে দেওয়া হয় দরজা।
রাজেশ আপাতত ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন।
লেখকের নিজস্ব মতামত। এর জন্য দৈনিক সুন্দরবন কোনোভাবেই দায়ী নয়।