দৈনিক সুন্দরবন ডেস্ক
শুধু মহিলারাই নন, শীতকালে পুরুষদের ত্বকেও নানা সমস্যা দেখা দেয়। শীতের সময় রুক্ষ ও মলিন ত্বকের জন্য পুরুষদের বিব্রত হওয়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর রাতে বাড়িতে ফিরে ত্বক চর্চার জন্য অনেকেই আর আলাদা করে সময় বের করতে পারেন না। এত ব্যস্ততার মধ্যে শীতকালে ত্বকের যত্ন নেবেন সেটাই এখানে তুলে ধরা হল।
সকালে ঘুম থেকে উঠে উষ্ণ গরম জলে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা জল ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। মুখ ধুয়ে নেওয়ার পর ত্বকের ধরণ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করুন। ইচ্ছে করলে মুখ পরিষ্কার করার জন্য ময়েশ্চারাইজার যুক্ত ক্লেনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। শীতকালে মুখে কালো ছোপ ছোপ দাগ পড়ে যায়। তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করুন। এতে মুখের ব্ল্যাকহেডস বা কালো দাগ সেরে যাবে।
ত্বক পরিষ্কার করার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ নিয়মে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগাতে হবে। স্ক্রাবিং করার পর গাঢ় ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগাতে পারেন। ত্বকের ধরণ অনুযায়ী শসা, গাজর, টক দই, চালের গুঁড়ো, মধুসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে নিজেই স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।
স্নান করার আগে আগে হাত-পায়ে আলিভ অয়েল, নারকেল তেল কিংবা নারকেল তেলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ঘুমানোর আগে উষ্ণ গরম জল দিয়ে হত, পা ও ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। যাদের ত্বক শুষ্ক তারা তৈলাক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এবং যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা ময়েশ্চারাজিং ক্রিম ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
শীতে ঠোঁটের সমস্যাগুলো একটু বেশি চোখে পড়ে, ঠোঁটের চামড়া উঠে যায়, ঠোঁট ফেটে যায়, কারও কারও ঠোঁট ফেটে রক্ত আসে।
ঠোঁটে সব সময় গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে, ঠোঁটের এসব সমস্যা থাকবে না।
যাদের ঠোঁটের সমস্যা একটু বেশি তারা সানস্ক্রিন লাগতে পারেন। শীতে ধূমপান করলে ঠোঁটের বেশি ক্ষতি হয়। তাই এই অভ্যেস ত্যাগ করুন।
শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরমতো শীতকালে চুলও আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। তাই নানান রকম সমস্যা দেখা দেয়। চুলের এসব সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
পুরুষদের সৌন্দর্য্য বিষয়ক একটি সংস্থার হেয়ার এক্সপার্ট কামরুল ইসলাম বলেন, “অনেকেরই একটা ভুল ধারণা আছে যে, প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে মাথার চুল পড়ে যায়, এটা ঠিক না। নিয়ম জেনে নিয়মিত চুলে শ্যাম্পু করলে চুলের অনেক সমস্যা-ই চলে যায়।”
তিনি আরও পরামর্শ দেন, একদিন অন্তর অন্তর চুলে শ্যাম্পু করলে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় থাকে।
শীতে আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলায় চুল রুক্ষ ও মলিন দেখায়। তাই শ্যাম্পু করার আগে চুলে তেল, মধু, লেবুর রস কিংবা ঠাণ্ডা চায়ের লিকার মালিশ করে কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু কর নিলে চুল সতেজ থাকবে।
সপ্তাহে একদিন চুলে কাঁচা-মেহেদিপাতা বেটে দিয়ে রাখুন। এতে স্বাভাবিক চুল পড়া কমে যেতে পারে।
চুলে যে কোন ধরনের প্যাক কিংবা মেহেদি ব্যবহার করার পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। তার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
চুলে হালকা তেল মালিশ করলে চুলের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে।
শীতের সময়ে ত্বকে নানান রকম সমস্যা লেগে থাকে। কারণ এই সময়ে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। আর জলের স্বল্পতার জন্য নানান রকম চামড়ার অসুখ দেখা দেয়। ফলে শুধু গরম কালেই নয়, ত্বকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি শীতেও প্রচুর পরিমাণে জল পান করা উচিৎ।
শীত বাড়লে পায়ের নানা সমস্যা যেমন পা ফাটা এবং পায়ের দুর্গন্ধে অনেকে ভোগেন। এই সময়ে পায়ের যত্ন নেওয়া জরুরি। পায়ের দুর্গন্ধ দূর করতে পাতলা ছিদ্রযুক্ত মোজা ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহারের পর প্রতিদিন পারলে জুতা রোদে দিন। আর মোজা একদিন পরার পর ধুয়ে রোদে শুকান। দুর্গন্ধ এড়াতে পায়ে দুর্গন্ধনাশক লোশন ব্যবহার করুন। সমস্যা প্রকট হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। নখের গোড়ায় জমে থাকা ময়লা থেকে জীবাণু সংক্রমিত হয়ে পায়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়, তাই প্রতি মাসে অন্তত দুবার পেডিকিউর করলে পা থেকে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।