খুব ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন বহু মানুষ। মাঠের ফসল মাঠেই শহীদ হয়েছে। জিনিসপত্রের এখন অগ্নিমূল্য। এক নিঃশ্বাসে কথাগুলি বললেন সাগরদ্বীপের হেন্দলকেচকি গ্রামের বাসিন্দা মলয় পাল।
গত সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল প্রায় গোটা সুন্দরবনকেই তছনছ করে দিয়েছে। আয়লার থেকেও ভয়ঙ্কর ছিল এই ঝড়। গৃহহীন হয়ে পড়েছেন কয়েকশ মানুষ। কেবলমাত্র সাগরদ্বীপেই ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা প্রায় ৩০০। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাদের নানা রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও সুন্দরবনের সাধারণ মানুষ নিশ্চিত হতে পারছেন না। আয়লার স্মৃতি এখনও তাদের মনে টাটকা। সেই সময়ের ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত নদী বাঁধ এখনও সব জায়গায় মেরামত করা সম্ভব হয়। আবার গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো হাজির হয়েছে বুলবুল।
সুন্দরবনের অর্থনীতির ভিত কৃষি। ঠিক এই জায়গাতে প্রবল আঘাত হেনেছে এবারের অমরসুমি ঘুর্ণিঝড়। সাগরদ্বীপে বিঘার পর বিঘা জমির ধান মাঠেই নষ্ট হচ্ছে। ধান জমিতে জল ঢুকে গিয়েছে। ঝড়ে ধান গাছকে শুইয়ে দিয়েছে। ফলে অনেক মাঠে পাকা ধান এখন জলে পচছে। কোথাও আবার সেই ধান থেকেই অঙ্কুরোদগম হয়েছে। কৃষকরা তাদের সারা বছরের মূল সম্বল ধান হারাতে বসেছেন। তাদের মাথায় হাত। শুধু ধান নয়, বুলবুলের তাণ্ডবে অন্যান্য ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শীতের শাক-সব্জির ফলন ব্যাপকভাবে ধাক্কা খেয়েছে। পান বোরোজে জল ঢুকে যাওয়ায় পানের ফলনও ক্ষতির মুখে পড়েছে। সাগরদ্বীপে এই মুহূর্তে আলুর কেজি ২০-২২ টাকা। পেঁয়াজের কেজি ৮০-৯০ টাকা। সাধারণ মানুষ বাজার থেকেও শাক-সব্জি কিনতে পারছেন না এই চড়া দামের কারণে।