সাগ্নিক চৌধুরি
বেশ কয়েকদিন ধরেই দেখছি সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছে, হয়তো আপনাদের ও নজর এড়ায়নি। আজ দেশের মহান এক নায়কের জন্মদিন আমরা যার জীবন এবং কর্মকে উপাসনার চোখে দেখি।
সেই মহান ব্যক্তিত্বর হাতে কোনও এক রাজনৈতিক দলের পতকা। সত্য সেলুকাস কী বিচিত্র এদেশ!
আমাদের রাজনৈতিক কোন্দল এমন পর্যায় এসেছে যে রাজনীতির এ পর্যায়ে এসে আমরা এমন কিছু মহান ব্যক্তিদের ব্যবহার করতেও ছাড়ছি না যাদের অদম্য ইচ্ছে, চরম সহনশীলতা এবং আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ আমাদের এই চির কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা এসেছে। রাজনীতিক স্বার্থে কিছু মানুষের কী তাহলে মূল্যবোধ তলানিতে এসে ঠেকেছে?
যদিও এখানে পরিস্কারভাবে জানিয়ে রাখা ভাল যে এ ধরনের বক্তব্য রাখার জন্য কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন বা কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি বিদ্বেষ রাখা কখনই জরুরী নয়। কারণ কিছু ভক্ত স্বরূপ ব্যক্তিবর্গ যদি এ বিষয়টিকে নিয়ে মানহানীর মামলা ঠুকে বসে বা ছয়-সাত বছরের পুরনো টুইট তুলে এনে ধর্মকে হাতিয়ার করে তোলে তাহলে সেক্ষেত্রে বর্ম তো প্রয়োজন হবেই। কারণ মাংস যারই হোক মুরগী, ছাগল বা গরু, তাতে আপত্তি কীসের? আসলে আমরা সবাই ওই খাঁচায় বন্ধী মুরগীটার মতন যার সামনেই নিজের আত্মীয় মরতে দেখেও নিজের মৃত্যু অবধি তাকে অপেক্ষা করতেই হয়। কিন্তু এভাবে আর কদিন? যদিও এসব প্রশ্ন করলে রাম কী বলবেন জানিনা কিন্তু রামরাজ্যের আশাতে রোজ রাম (rum) খাওয়াদের নির্ঝরে স্বপ্ন ভঙ্গ অবধারিত।
তবে আমি কিন্তু বাবু একদম সাধারণ মধ্যবিত্ত, এসব রাজনৈতিক ক্যাচাল আমার চড়ুইপাখির মাথায় আসে না। আমার দুবেলা দুটো অন্ন জুটলেই চলে যায়। মেলাতে, খেলাতে বা জনসভাতে ফ্রিতে খেতে পেলে আমি খুশি। কারণ আমি এমন তো ভারতীয় আর ওরা তো ইন্ডিয়ান।
আসলে যতই আপনি পৃথিবীর বৃহৎ গণতন্ত্রের প্রজাতান্ত্রিক সমাজের কল্পনা করুন না কেন, আসলে আপনি আছেন এমন এমন এক জায়গাতে যেখানে রাজনৈতিক ঝামেলার জন্য কলেজে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মূর্তির মাথা ভাঙতে হয়, সেখানে আর যাই হোক বিবেকানন্দ বা সুভাষচন্দ্র বোসের মতন মানুষদের যে সম্মান রক্ষা হবে না তা বলাই বাহুল্য।
তবুও কথায় আছে ‘বৃথা আশা মরিতে মরিতেও মরে না’ তাই বলব একদিন এই নিঃস্ব সমাজের নগ্নতার নগণ্য আবরণ মনে করাতে কেউ হয় বলে উঠবে, ‘কী রে তোর কাপড় কোথায়?’