সাগ্নিক চৌধুরী
বুড়ো খোকারা দেশটা ভেঙ্গে ভাগ করলেও দুই বাংলার সমুদ্র উপকূল একই রয়ে গেছে। তাই সুন্দরবন বললে একদিকে যেমন পশ্চিমবাংলা অন্যদিকে বাংলাদেশ ও হাত তুলে বলে ওঠে, এদিকে দেখুন ‘আমরাও এদিকে আছি স্যার’। তেমনই সুন্দরবন বলতে ম্যানগ্রোভ অরণ্য যেমন আছে তেমনই রয়েছে অন্যতম আকর্ষণ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। যার সৌন্দর্য্য এবং ভিতি উভয়ই মোহিত করে পর্যটকদের। কিন্তু ইদানিংকালে এনাদের প্রভাব বলুন আর প্রতিপত্তি সবই প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। চোরাচালানকারীদের যন্ত্রণাতে এদের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেঙ্গল টাইগারের মধ্যে সুন্দরবনের বাঘ বৈচিত্র্যময় এবং পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা বেশি। জিনগত বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে সুন্দরবনে বাঘের তিনটি ধরন (হেপলোটাইপ) আছে। ভারতে দুই, নেপাল ও ভুটানে এক ধরনের বেঙ্গল টাইগার আছে। জিনগত বৈচিত্র্যের কারণে প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও সুন্দরবনের বাঘ এখনো টিকে আছে। কিন্তু এত জায়গা থাকতে সুন্দরবনে বাঘের এত প্রভাব কেন? এর উত্তর হিসেবে বাঘ বিশেষজ্ঞদের একদল বলেছেন যে আসলে বাঘেরা প্রথমে থাকত শুস্ক জমিতে কিন্তু সেখানে খাদ্যাভাবের জন্য মহিষ, শম্বর, হরিণ, শূকর, বানর, গরু ও ছাগল এইসব খেতে তারা চলে আসে জলাভূমিতে। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে সুন্দরবনে এদের খাবার ধীরে ধীরে কমে আসছে। ফলে আসতে আসতে কিছু বাঘ লোকালয়ে চলে আসছে খাওয়ারের আশায় আর ক্ষেত খামার থেকে ছাগল বা মুরগি নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও বিভিন্ন চোরাচালানকারীদের উপদ্রব দিন দিন বেড়েই চলেছে। এরা বাঘ শিকার করে তার গায়ের চামড়া নখ বেছে দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মার্কেটে। আমাদের দেশের তথা রাজ্যের জাতীয় প্রাণী আজ প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে, এই অবনমনের চরা থেকে বাঘকে বাঁচাতে আমাদের হাত এগিয়ে দিতে হবে। না হলে সমূহ বিপদের অশনিসংকেত ঘনিয়ে আসছে।