করোনাভাইরাসের কারণে দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে লকডাউন। প্রথম ঠিক ছিল, ১৪ মার্চ পর্যন্ত চলবে এই লকডাউন। কিন্তু কোভিড-১৯ দেশে যেভাবে তাণ্ডব নৃত্য করছে, তা বিবেচনা করে বাড়ানো হয় লকডাউনের সময়সীমা। কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩ মে উঠবে লকডাউন।
এদিকে লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই দিন আনা, দিন খাওয়া মানুষরা প্রবল সমস্যায় পড়েছেন। আবার যারা ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়েছেন, তারাও সমস্যায় পড়েছেন। এরকমই একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক সুন্দরবন ডট কমে। সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার দক্ষিণ লক্ষ্মী নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা স্বপন কুমার ভুঁইয়া গত ১০ মাস ধরে রয়েছেন কেরলের ত্রিশুর জেলার চালকুড়িতে। সেখানে একটি শোরুমে তিনি কাজ করেন। তার সঙ্গে রয়েছেন পাথরপ্রতিমার আরও পাঁচ বাসিন্দা। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে তারা কিছু চাল, ডাল সংগ্রহ করেছিলেন। তবে লকডাউনের সময়সীমা বর্ধিত হওয়ার ফলে তারা চরম বিপাকে পড়েন। তাদের কাছে নগদ ফুরিয়ে আসছিল। রান্নার গ্যাসও শেষ হয়ে যায়। রান্না করার জন্য তাদের স্থানীয় জঙ্গলে কাঠ কাটতে ছুটে যেতে হয়েছিল। প্রায় অর্ধাহারে তাদের দিন কাটছিল। দৈনিক সুন্দরবনের এই রিপোর্ট চোখে পড়ে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা, বর্তমানে কর্মসূত্রে কুয়েতে থাকা এক বাঙালি। মানুষ বিপদে পড়লেই তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাহায্য করার প্রস্তাব দেন। সেই অনুযায়ী তিনি যোগাযোগ করেন দৈনিক সুন্দরবনের সঙ্গে। আমাদের থেকে স্বপন বাবুর ফোন নম্বর নিয়ে সরাসরি তার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে কুয়েত থেকে তিনি কথাও বলেন। কেরলের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। স্বপনবাবু সহ বাকিদের সাহায্যের আশ্বাস প্রদান করেন ওই প্রবাসী বাঙালি। সেই সাহায্য পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হওয়ায়, স্বপনবাবুর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৬,০০০ টাকা পাঠান ওই ব্যক্তি।
শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া এবং মেদিনীপুর সহ ভারতের বিভিন্ন জায়গার তার উদ্যোগে করোনার প্রকোপে সমস্যায় পড়া অসহায় মানুষদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, একজন ভারতীয় হিসেবে ভারতীয় ভাইদের জন্য এটুকু করা আমার কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। আপনারা সাংবাদিক। আপনাদের অনেক কাজ আছে। মানুষের মধ্যে মানবতার শিক্ষা দেওয়ার জন্য এই সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংকীর্ণ ধর্মীয় ভাবনায় না গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।