আইন রয়েছে। রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তা সত্ত্বেও সুন্দরবনে নির্বিচারে চলছে ম্যানগ্রোভ ধ্বংসলীলা। প্রশাসনের তৎপরতায় মাঝে মাঝে অভিযান চলে। থেমে যায় বেআইনী কারবার। কিন্তু কিছুদিন পর ফের শুরু হয় অবৈধ কাজ। সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া যায়। সম্প্রতি রায়দিঘিতে এমন অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: মটন বিরিয়ানি থেকে লুচি-ছোলার ডাল, কলকাতার খাবারে মুগ্ধ হয়েছিলেন দিয়েগো মারাদোনা!
অধিকাংশ ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের মদতে চলে এই ম্যানগ্রোভ নিধন। জঙ্গল কেটে সাফ করার পর সেখানে তৈরি করা হয় মাছের ভেড়ি। কোথাও গজিয়ে ওঠে বেআইনী নির্মাণ। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়দিঘির মণি এবং ঠাকুরান নদীর পাড়ে দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গল সাফাই করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বহুবার এর প্রতিবাদ করেছেন। তবে তাতে কাজ হয়নি। বরং যারা প্রতিবাদ করেছেন, তাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমনই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ ঘিরে পরিস্থিতি সরগরম হয়েছে। তবে মেলেনি কোনো স্থায়ী সমাধান।
আরও পড়ুন: করোনাকালে তীব্র সঙ্কটে পড়েছেন সুন্দরবনের কৃষকরা
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, রায়দিঘির দমকল ফেরিঘাটের কাছে মণি নদীর পাড়ে বিঘার পর বিঘা ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছে ম্যানগ্রোভ কাটার ফলে। স্থানীয়দের দাবি, এই ফাঁকা জায়গাগুলিতে এক সময় ম্যানগ্রোভ অরণ্য ছিল। দমকলের ঠাকুরান নদীর মোহনায় মকবুলের ট্যাঁকেও ম্যানগ্রোভ সাফ করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিঘার পর বিঘা বাদাবন কেটে সাফ করে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব শ্রীধরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভুবনেশ্বরী চর থেকেও একই অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। রায়দিঘির যে কয়েকটি স্থানে ম্যানগ্রোভ কাটার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আম্ফান, করোনার জোড়া থাবার জর্জরিত সুন্দরবনের অর্থনীতি পর্যটনের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়াতে পারে
রায়দিঘির এই জঙ্গলগুলিতে বাইন, কাঁকড়া, কেওড়া, গেঁয়ো, গরাণ, হেঁতাল, গর্জন ও সুন্দরী প্রজাতির ম্যানগ্রোভ রয়েছে। এই জঙ্গলগুলিতে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার না থাকলেও রয়েছে লুপ্তপ্রায় বাঘরোল, ভাম, শেয়াল-সহ বহু প্রাণী। এছাড়া ম্যানগ্রোভের ডালে অনেক পাখিও বাসা বাঁধত। তবে নির্বিচারে অরণ্য ধ্বংসের ফলে জীববৈচিত্র ক্রমশ ভেঙে পড়ছে।