নিজস্ব প্রতিনিধি, খড়িবাড়ি (শিলিগুড়ি মহকুমা), ২৮জানুয়ারি: চীনের পর নেপালে এক ব্যক্তির শরীরে পাওয়া গিয়েছে করোনা ভাইরাসের জীবাণু। সীমান্ত এলাকায় সতর্কতা অবলম্বন করেছে ভারত সরকার। ভারত-নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কিতে পর্যটকদের ওপর নজরদারি শুরু হয়েছে। রবিবার থেকে সীমান্তের পানিট্যাঙ্কিতে খড়িবাড়ি ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে খোলা হয়েছে সচেনতা শিবির। এলাকাবাসী ও পর্যটকদের মাইকিং করে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতন করছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। তবে পানিট্যাঙ্কি স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশনে নামমাত্র মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। শুধুমাত্র কয়েকটি ফ্লেক্স ও মাইকিংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ সচেতনতা শিবির বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে ফ্লেক্স বানিয়ে করোনা ভাইরাস সংক্রামণের লক্ষণ, বিস্তার ও প্রতিকারের উপায় লিখে রাখা হয়েছে। এছাড়া মাইকিং করে বলা হচ্ছে, ইমিগ্রেশন দিয়ে প্রবেশ করা দেশি-বিদেশী নাগরিকদের গাঁয়ে জ্বর জ্বর ভাব,শুকনো কাশি,গলা ব্যাথা,চোখ লাল,শ্বাসকষ্টসহ করোনা ভাইরাসের কোন উপসর্গ দেখা দিলে শিবিরে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।


মঙ্গলবার শিবিরে গিয়ে দেখা যায়, শিবিরে বসে রয়েছে একজন আশাকর্মী ও ২জন সোশ্যাল ওয়ার্কার। মাইকে আগে থেকে রেকর্ড করা করোনা ভাইরাসের কোন উপসর্গ,বিস্তার পদ্ধতি ও প্রতিকারের উপায় ঘোষণা করা হচ্ছে। পথ চলতি দেশি-বিদেশী নাগরিকদের ওপর করা নজরদারির কোন লক্ষণই এদিন দেখা যায় নি। দায়সারাভাবে চলছে সচেতনতা শিবির।উভয় দেশের হাজার হাজার নাগরিকসহ পর্যটকেরা শিবিরের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করছেন না। করোনা ভাইরাস সংক্রামিত যে কোন ব্যক্তি অজ্ঞতার কারনে অনায়াসে ভারতে প্রবেশ করতে পারে বলে দাবি বহু এলাকাবাসীর।
খড়িবাড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ প্রফুল্লিত মিনজ বলেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশানুযায়ী পর্যটকসহ উভয় দেশের নাগরিকদের সচেতন করতে ইমিগ্রেশন চেক পোষ্টের পাশে শিবির করা হয়েছে।ওই শিবির প্যারা মেডিকেল কর্মীদের দিয়ে পরিচালনা করতে বলা হয়েছে।যদি করোনা ভাইরাস সংক্রামণের উপসর্গ নিয়ে কোন ব্যক্তি শিবিরে আসে তবে তাকে প্রথমে পার্শ্ববর্তী বাতাসি প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে এসে কর্তব্যরত চিকিৎসক দিয়ে তাকে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করা হবে। সন্দেহজনক মনে হলে ওই ব্যক্তিকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য খোলা আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেফার করে ভর্তি করিয়ে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তে প্রহরারত এসএসবি, ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট ও কাস্টমস অফিসের আধিকারিকদের সন্দেহজনক পর্যটকের বিষয়ে নজরদারি করতে বলা হয়েছে। খড়িবাড়ি ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা যায়, দু দিন ধরে চলা শিবিরে কোন সন্দেহজনক ব্যক্তি যোগাযোগ করেন নি। স্থানীয় মদনজোত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মৃনালরঞ্জন রায় অভিযোগ করে বলেন, ভারত-নেপাল চুক্তি অনুযায়ী নেপালের নাগরিকরা পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করে। আর তাই নেপালি নাগরিকদের ইমিগ্রেশন অফিস কিংবা কাস্টম অফিসে যোগাযোগ করতে হয় না।তাই নেপাল-চীন সীমান্তের করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কোন নেপালি নাগরিক অসচেতনভাবে যে কোন সময় সহজে ভারতে ঢুকে পড়তে পারে। ফলে সেইসব নাগরিকদের সীমান্তে সনাক্ত করার কোন ব্যবস্থাই করে নি স্বাস্থ্য দপ্তর। এলাকাবাসী দ্রুত সীমান্তে কঠোর নজরদারির দাবি করেছেন।