আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলার জন্য বিপুল আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার। গঙ্গাসাগরের পুণ্যার্থীদের জন্য আগামী মাস থেকেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এবং ২,২০০ বাস রাস্তায় নামাতে চলেছে রাজ্যের পরিবহন দপ্তর। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গঙ্গাসাগর মেলার সময় অতিরিক্ত ৩০০ বাস রাস্তায় নামানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মন্ত্রী বলেন, গত বছর মেলার সময় ১,৯০০ বাস চালানো হয়েছিল। এবার ৮ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য মেলার জন্য ২,২০০টি বাস চালানো হবে। রাজ্যের পরিবহন দপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, আপৎকালীন মেডিকেল পরিষেবার অঙ্গ হিসেবে দুটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের জন্য ১৩২টি ভেসেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যের পরিবহন দপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে অতিরিক্ত বাসগুলি ১১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চালানো হবে। জানুয়ারির ১৫ এবং ১৬ তারিখে অতিরিক্ত ১০০টি বাস রিজার্ভে রাখা হবে এবং চাহিদা অনুযায়ী সেগুলি ব্যবহার করা হবে।
কাকদ্বীপে লট নম্বর ৮ জেটিতে নিরাপত্তাকর্মীদের পরিবহনের জন্য সুন্দরবন পুলিশ জেলাকে জানুয়ারির ৭ তারিখ থেকে জানুয়ারির ১০ তারিখ পর্যন্ত মোট ১১০টি বাস প্রদান করা হবে। অনুরূপভাবে তাদের ফিরে আসার জন্য জানুয়ারির ১৭ এবং ১৮ তারিখে সম সংখ্যক বাস প্রদান করা হবে। সূত্রের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন, গঙ্গাসাগরে পুণ্যার্থীদের যাতায়াতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে মন্ত্রীদের খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী সিনিয়র ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন, গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন তারা যেন বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থানগুলিতে হাজির থেকে সব কিছুর তদারকি করেন। পঞ্চায়েত, স্বাস্থ্য, বিপর্যয় মোকাবিলা এবং বিদ্যুৎ সহ সমস্ত দপ্তরকে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক বলেন, অন্যান্য তীর্থস্থানের মতো গঙ্গাসাগর সরাসরি রেল বা সড়কপথে সংযুক্ত নয়। এর ফলে বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থীকে সাগরদ্বীপে নিয়ে যাওয়া এবং ফেরত নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে ওঠে।
গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে এবার রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ই-দর্শন নামে একটি মোবাইল অ্যাপের উদবোধন করা হয়েছে। এটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যাবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে গঙ্গাজলের প্যাকেট অর্ডার করা যাবে এবং প্রদান করা ঠিকানায় তা ডেলিভারি দেওয়া হবে। মেলার সমস্ত কার্যাবলী এই অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এর পাশাপাশি এই অ্যাপ থেকে পাঁচটি পৃথক ভাষায় পরিবহন সহ অন্যান্য বিষয়ের বিশদ তথ্য পাওয়া যাবে। জোয়ারের সময়ও এই অ্যাপ থেকে আগাম জানা যাবে।
বাবুঘাট থেকে গঙ্গাসাগর যেতে পুণ্যার্থীদের সহায়তা করতে পথদিশার মতো একটি পৃথক অ্যাপ লঞ্চ করা হবে। অবস্থান, সংশ্লিষ্ট থানা, থানার ফোন নম্বর এবং সাগরে পৌঁছানোর কি উপায় রয়েছে তা বলে দেবে এই অ্যাপ। এছাড়া গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে সাগরদ্বীপের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবার ২৫টি ওয়াইফাই জোন তৈরি করা হবে।