উত্তর ভারতের বিভিন্ন এলাকায় এর মধ্যেই হাড় কাঁপানো শীত পড়েছে। সেসব উপেক্ষা করে গত রাত থেকেই পাঞ্জাবে হরিয়ানা সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন কৃষকরা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, গত সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্টে পাস হওয়া নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। প্রশাসনও সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। রাজধানীর বিভিন্ন এন্ট্রি পয়েন্টে জারি করা হয় কড়া নিরাপত্তা। অনেক জায়গায় আবার পুলিশের সাথে কৃষকদের সংঘর্ষ বাধে।বৃহস্পতিবার সারাদিন কৃষকদের এই কর্মসূচির সংক্ষেপ নিচে তুলে ধরা হল।
পাঞ্জাবে জল কামানের সামনে কৃষকরা
নয়া কৃষি বিল বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদের সময় এদিন পাঞ্জাবে পুলিশের সাথে কৃষকদের সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জল কামান ব্যবহার করে পুলিশ। হরিয়ানা সীমান্ত এদিন সিল করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিল্লিতে যাওয়ার জন্য সেই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন কৃষকরা। দিল্লি চলো স্লোগান তুলে তারা অগ্রসর হতে থাকেন। সন্ধ্যা নাগাদ পাঞ্জাব ও হরিয়ানার বেশ কিছু কৃষক দিল্লিতে পৌঁছতে সক্ষম হন। দিল্লির বর্ডার পয়েন্টগুলি সিল করা না হলেও সেখানে ছিল ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তা। বিক্ষোভকারীদের ট্রাক ও ট্রাক্টর আটকাতে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশ।
সমস্যায় নিত্যযাত্রীরা
কৃষকদের এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে দিল্লি এবং এনসিআর অঞ্চলে এদিন ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। অনেকে এদিন ফ্লাইট ধরতে পারেননি। উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে প্রবেশ করা গাড়িতে এদিন তল্লাশি চালায় পুলিশ। কৃষকদের বিক্ষোভের কথা মাথায় রেখে এদিন এনসিআর এলাকায় দিল্লি মেট্রোর পরিষেবাতেও কাটছাঁট করা হয়।
কড়া নিরাপত্তা
কৃষকদের বিক্ষোভের জেরে এদিন দিল্লি সহ আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়। ফরিদাবাদ ও গুরগাঁও সীমান্তে ব্যাপক পরিমাণে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পূর্বেই পাঞ্জাব সীমান্ত সিল করে দেয় হরিয়ানা প্রশাসন। যাতে কৃষকরা দিল্লিতে পৌঁছাতে না পারেন, তার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এছাড়া দিল্লিতে ২৬ ও ২৭ নভেম্বর কৃষকদের প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করতে কৃষক সংগঠনের অনুরোধে অনুমোদন দেয়নি পুলিশ।
বাগযুদ্ধে জড়ালেন পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী
এদিকে কৃষকদের বিক্ষোভের মাঝে বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়লেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং এবং হরিয়নার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার। কৃষকদের দিল্লিতে যাওয়া আটকাতে হরিয়ানা তাদের সীমান্ত সিল করে দেওয়ায় সরব হয়েছেন অমরিন্দর সিং। তিনি হরিয়ানার এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। এই পদক্ষেপকে তিনি অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক বলে তকমা দিয়েছেন। এর পাল্টা হিসেবে খাট্টার বলেছেন, নিষ্পাপ কৃষকদের উস্কানি দেওয়া বন্ধ করুক পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী।