সুন্দরবনের গর্ব রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। তবে চিন্তার ব্যাপার হল, এই প্রাণী বর্তমানে প্রবল সঙ্কটে রয়েছে। তাদের বাসস্থান এবং খাবারের উৎস ক্রমশ কমে আসছে। খাবারের সন্ধানে বাধ্য হয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে রয়্যাল বেঙ্গল। ফলে বাঘ আর মানুষের মধ্যে সংঘাত বাড়ছে। অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে পড়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে বাঁচিয়ে রাখতে অবশ্য চেষ্টায় কোনো খামতি রাখছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। খাতায়-কলমে দেখা যাবে, রয়্যাল বেঙ্গলকে বাঁচাতে সরকারের তরফ থেকে একাধিক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যে প্রাণী সুন্দরবনের গর্ব, সেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সম্পর্কে কিছু তথ্য একঝলক দেখে নেওয়া যাক।
সাধারণ নাম: Bengal Tiger
বৈজ্ঞানিক নাম: Panthera tigris tigris
ধরণ: স্তন্যপায়ী
ডায়েট: মাংশাসী
গড় আয়ু: ৮ থেকে ১০ বছর
সাইজ: শরীর: ৫ থেকে ৬ ফুট; লেজ: ২ থেকে ৩ ফুট
ওজন: ২৪০ থেকে ৫০০ পাউন্ড
বাঘের সংখ্যা
এক সময় বাঘেদের আটটি সাবস্পিসিজ ছিল। তবে বিংশ শতাব্দীতে এর মধ্যে তিনটি সাবস্পিসিজ অবলুপ্ত হয়েছে। বিগত ১০০ বছরে নানা কারণে সঙ্কটের মুখে পড়েছে ব্যাঘ্র প্রজাতি। বিশেষত বেআইনীভাবে মানুষ জঙ্গল কাটার ফলে বাঘ নিজেদের বাসস্থান হারিয়েছে। শুধু তাই নয়, মাংশাসী বাঘ খাদ্য সঙ্কটেও ভুগেছে। গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো হাজির হয়েছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। এর জেরে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে। সুন্দরবনের অনেক নীচু এলাকা আগামী কয়েক দশকের মধ্যে জলের তলায় চলে যাবে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে রয়্যাল বেঙ্গল আরও সঙ্কটে পড়বে।
আচরণ
বাঘ সাধারণত একা থাকতে পছন্দ করে। ঘ্রাণশক্তির মাধ্যমে তারা নিজেদের এলাকা চিহ্নিত করে রাখে। নিজেদের এলাকায় তারা প্রতিপক্ষের কাউকে ঢুকতে দেয় না। বাঘ সাধারণত নিশাচর প্রাণী। রাতে শিকার করতে পছন্দ করে। বুনো মোষ, হরিণ, শূকর এবং অন্যান্য বড় স্তন্যপায়ী প্রাণী হল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের প্রিয় খাবার। বাঘের গায়ে যে ডোরাকাটা দাগ থাকে, এর সাহায্যে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকে। গাছ-পাতার আড়ালে সহজেই মিশে যায় এই ডোরাকাটা দাগ। শিকার যতক্ষণ না কাছে আসছে, ততক্ষণ ওৎ পেতে থাকে রয়্যাল বেঙ্গল।
ক্ষুধার্ত বাঘ এক রাতে ৬০ পাউন্ড পর্যন্ত মাংস খেতে পারে। তবে সাধারণত, তারা এতটা খায় না। বাঘ অত্যন্ত শক্তিশালী এবং হিংস্র প্রাণী। তবে মানুষের মাংস তাদের প্রথম পছন্দ নয়। অনেক সময় তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই শিকার করতে পারে না। বাঘিনী সাধারণত দুটি থেকে ছয়টি সন্তানের জন্ম দেয়। পুরুষ সঙ্গীকে নিয়ে বাঘিনী তার ছানাদের বড় করে তোলে। ১৮ মাস বয়স না হওয়া পর্যন্ত বাঘের ছানা শিকার করতে পারে না। দু-তিন বছর বয়স পর্যন্ত তারা মায়ের সাথেই থাকে। পরে নিজের এলাকার সন্ধানে অন্যত্র চলে যায়।