সত্যজিৎ মান্না, পাথরপ্রতিমা
রবিবার রাতে সুন্দরবনে আছড়ে পড়ে ভয়ঙ্কর ঘুর্ণিঝড় বুলবুল। গোটা সুন্দরবনকে তছনছ করে দেয়। ভেঙে পড়ে প্রচুর ঘরবাড়ি। ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালায় বুলবুল। তীব্র হাওয়ায় গোটা সুন্দরবনে যেমন অসংখ্যা গাছ ভেঙে পড়েছে বা উপড়ে গিয়েছে, ঠিক একই অবস্থা বিদ্যুতের পিলারের। কোনো জায়গায় বিদ্যুতের পিলার হেলে গিয়েছে। আবার কোনো জায়গায় সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।
বুধবার রাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমা, কিশোরীনগর, ভগবতপুর, ব্রজবল্লভপুর, শিবগঞ্জ, জি প্লট, মাধবনগর সহ বিস্তীর্ণ এলাকা অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। এখনও এই এলাকাগুলিতে বিদ্যুত পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। কিছু কিছু বাজার এলাকায় বিদ্যুৎ চালু হয়েছে। তবে গ্রামের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এর জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কৃষিপ্রধান সুন্দরবনে শীতের মরসুমে ধান, আলু, টমাটো, লঙ্কা সহ না না সব্জি চাষ হয়। এই সময় সেচের জন্য বৃষ্টির বদলে ভূগর্ভস্থ জল বা জলাশয়ের উপর কৃষকরা ভরসা করেন কৃষকরা। পাম্প চালিয়ে সেই জল কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সেই কাজ ব্যহত হচ্ছে। মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে সাধারণ মানুষের প্রচণ্ড অসুবিধা হচ্ছে। অনেক জায়গায় জেনারেটর চালিয়ে রীতিমতো মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার কারবার গজিয়ে উঠেছে। কোথায় মোবাইল চার্জ দিতে নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা, কোথাও তার বেশি। আবার এখানে গেলেই যে মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়া যাবে এরকম কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ গ্রামের প্রত্যেকেই নিজেদের মোবাইল নিয়ে সেখানে হাজির হচ্ছেন। রীতিমতো লাইন দিয়ে মোবাইল চার্জ দিতে হচ্ছে।
পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কোনো আধিকারিক মন্তব্য করতে নারাজ। তবে বিদ্যুতের লাইন, পিলার বসানোর কাজে যুক্ত ঠিকাদারি সংস্থার কর্মীদের স্পষ্ট বক্তব্য, যেভাবে বিদ্যুতের পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে সমগ্র পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অন্তত এক ২০-২৫ দিন বা তার বেশি সময় লাগবে।