বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনা দেখা দিল। ক্যাম্প নৌয়ের বাইরে পুলিশ এবং কাতালান স্বাধীনতার জন্য আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। অক্টোবরে স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর এই এল ক্লাসিকো ঘিরে ফের অশান্তির আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। স্পেনের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ফিক্সচার চলাকালীন মাঠে অশান্তি তৈরির চেষ্টা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। আশঙ্কা করা হচ্ছিল, খেলা চলাকালীন মাঠের মধ্যে হলুদ বিচ বল ছুঁড়ে দিয়ে খেলা পণ্ড করার চেষ্টা চালানো হতে পারে। এই আশঙ্কা যে একেবারেই অমূলক নয়, বুধবারের ঘটনা সেটাই প্রমাণ করল। মাঠের বাইরে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বিক্ষোভকারীদের হটাতে ফোম বুলেট ছোঁড়ে পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে পালটা পাথর, জলের বোতল ইত্যাদি ছুঁড়তে থাকে। তারা বিনেও আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পুলিশ-জনতার খণ্ডযুদ্ধে ৪৬ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এদের মধ্যে আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, এই গণ্ডগোলের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


বিক্ষোভকারীদের হাতে কাতালানের বিচ্ছিন্নতাবাদী পতাকা ছিল। রাস্তার মাঝে তারা ব্যারিকেড গড়েন। পরে সেগুলি পুড়িয়ে দেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। মাঠের মধ্যে ম্যাচ মোটামুটি শান্তিতেই চলেছিল। ম্যাচের শুরুতে স্টিউয়ার্ডরা এক গুচ্ছ হলুদ বিচ বল মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর অবশ্য কোনো গণ্ডগোল দেখা যায়নি।
বার্সেলোনার কোচ আর্নেস্টো ভালভেরদে বলেন, ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে আশঙ্কা ছিল। মাঠে কিছু হলুদ বল পড়তে দেখেছি। তবে তার থেকে বেশি কিছু হয়নি। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলার চেষ্টা করেছি।
অন্যদিকে রিয়ালের কোচ জিনেদাইন জিদান বলেন, প্রত্যেকেই একটি ভালো ফুটবল ম্যাচ দেখতে চেয়েছিলেন। সেই দিকে থেকে আমরা খুশি হয়েছি বলতে পারি।
দুটি দলকেই এল ক্লাসিকোতে ছন্দে দেখা যায়নি। এই হাই ভোল্টেজ ম্যাচে মাঠে যে টানটান উত্তেজনা থাকে তার ছিটে ফোঁটাও দেখা যায়নি। কোথাও যেন একটা ছন্দপতন হয়েছে, সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। তবে দিনের শেষে ম্যাচে পরাজিত না হয়ে বোধহয় উভয় দলই খুশি হয়েছে।
এই ম্যাচে গোল শূন্য ড্র হওয়ার ফলে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রইল বার্সেলোনা। গোলের তফাতে তারা রিয়ালের থেকে এগিয়ে রয়েছে। টুর্নামেন্টের ঐতিহাসিক লিগ মিটিংয়ে উভয় দল ৭২টি করে ম্যাচ জিতেছে।
এই ম্যাচটি প্রথমে ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলনকারী নয় জন নেতাকে কারাদণ্ড দেওয়ার পর থেকেই কাতালোনিয়া জুড়ে বিক্ষোভ দেখা দেয়। তারপর নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। অক্টোবরের পরিবর্তে ১৮ ডিসেম্বর ম্যাচের আয়োজন করা হয়। ম্যাচ মোটামুটি নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হলেও, স্টেডিয়ামের পাশে অশান্তি ছিল।