দৈনিক সুন্দরবন ডেস্ক
এভাবেও ফিরে আসা যায়! ঠিক একশ বছর আগের কথা। বৃটিশদের হাত ধরে কলকাতায় পৌঁছেছিল ডাবল ডেকার বাস। কলকাতার গণপরিবহণ ব্যবস্থার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছিল এই বাস। তবে সময়ের পরীক্ষায় টিকে থাকতে পারেনি। নব্বইয়ের দশক থেকে ধীরে ধীরে কলকাতার রাস্তা থেকে হারিয়ে যেতে থাকে এই বাস। পরে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়। কিন্তু আবার স্বমহিমায় তিলোত্তমায় ফিরতে চলেছে ডাবল ডেকার বাস। এবং আগের তুলনায় এই ডাবল ডেকার বাসগুলি আরও বেশি ঝাঁচকচকে, অত্যাধুনিক।
কলকাতার রাস্তায় ডাবল ডেকার বাস চালানোর জন্য আপাতত সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অব রোড ট্রান্সপোর্টের (সিআইআরটি) থেকে সার্টিফিকেটের অপেক্ষা করা হচ্ছে। চলতি মাসেই সেটি পাওয়া যাবে বলে রাজ্যের পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে, মার্চের প্রথম সপ্তাহেই কলকাতার রাস্তায় চলতে শুরু করবে দুটি ডাবল ডেকার বাস। এই দুটি বাস সিআইরটির সার্টিফিকেট পেলে, এগুলিই হবে দেশে সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত প্রথম ডাবল ডেকার বাস। এই বাসগুলি ভারতেই নির্মাণ করা হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ইলেক্ট্রিক ভেহিকল আকারে সমগ্র দেশে ডাবল ডেকার বাসের পুনরায় আগমনের ক্ষেত্রে নয়া সূচনা হবে। আপাতত এই দুটি বাস ডিজেলে চলবে। তবে আগের ডাবল ডেকার বাসসগুলির মতো এগুলি বেশি তেল খাবে না। বরং বিএস ফোর প্রযুক্তিযুক্ত এই ডাবল ডেকার বাসগুলি জ্বালানি সাশ্রয়ী।
মূলত এই অত্যাধিক জ্বালানি খরচের জন্যই ১৯৮০ দশকের শেষের দিকে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন ক্ষমতাসীন বামফ্রন্ট সরকার ডাবল ডেকার বাস ধীরে ধীরে কলকাতার রাস্তা থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। তখনকার ওই বাসগুলি থেকে ঘন, কালো ধোঁয়া বেরোতো। ২০০৫ সালে রাস্তা থেকে উঠে যায় শেষ ডাবল ডেকার বাস। যদিও মুম্বইয়ের রাস্তায় এখনও ডাবল ডেকার বাস চলতে দেখা যায়। তবে সেই সংখ্যাটাও ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। একসময় ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানীতে ২৫০-এরও অধিক ডাবল ডেকার বাস চলত। কিন্তু কমতে কমতে এখন মুম্বইতে বিইএসটির মাত্র ৪৮টি ডাবল ডেকার বাস রয়েছে।
বাস, ট্রাম, মেট্রো ইত্যাদি থাকা সত্ত্বেও কলকাতার গণপরিবহণ চিত্রটা খুব একটা সুখকর নয়। বিশেষকরে মাঝেরহাট ব্রিজ এবং টালা ব্রিজের কাজ চলার ফলে সমগ্র কলকাতায় যানবাহনের গতি কিছুটা হলেও স্লথ হয়ে গিয়েছে। এবার ডাবল ডেকার বাসে সাধারণ যাত্রীদের কিছু সুবিধা হয় কি না, তা সময়ই বলবে।
ছবি সৌজন্য তৃণমূল কংগ্রেসের ওয়েবসাই।