কলকাতায় ডেঙ্গুতে আরও তিনজনের মৃত্যু হল। এদের মধ্যে একজন ছিলেন স্কুল শিক্ষক, অন্যজন কলকাতা পুরনিগমের কর্মী।
মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ২৯ বছর বয়সী ডেবরার বাসিন্দা এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের। এমনকি ওই শিক্ষকের স্ত্রীও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি। স্বামীর শেষকৃত্যে যোগ দিতে বন্ডে স্বাক্ষর করে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। একই দিনে মারণ জ্বরে আরও দুজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
প্রথমদিকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন ডেঙ্গু আক্রান্ত ওই স্কুল শিক্ষক ভোলানাথ দাস। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি বলেই পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। ভোলানাথ বাবুর মাল্টি অরগ্যান ফেলিওরের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার ডায়ালিসিস হয়। ভোলানাথ বাবুর ভাই যদুনাথ বলেন, দাদার রাতের দিকে ডায়ালিসিসের প্রয়োজন পড়ে। তখন আমাদের বলা হয় মেডিকেল কলেজে রাতে ডায়ালিসিস করার মতো সুবিধা নেই। ওর অবস্থা ক্রমশ গুরুতর হতে থাকে। তাই বাধ্য হয়ে তাকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করি।
সোমবার রাতেই ভোলানাথ বাবুকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে সিভিয়ার ডেঙ্গু এবং মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর।
ভোলানাথ বাবু মালদার একটি স্কুলে পড়াতেন। সম্প্রতি তাকে পশ্চিম মেদিনীপুরে বদলি করা হয়। জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর তার পরিবারের তরফ থেকে সন্দেহ করা হয়, তার ডেঙ্গু হয়েছে। তাকে কলকাতার স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিনে নিয়ে আসা হয়। সেখান তার এক আত্মীয় পোস্ট ডক্টরাল অধ্যায়ন করছেন।
অন্যদিকে ডেঙ্গুতে কলকাতা পুরনিগমের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম শান্তনা বন্দ্যোপাধ্যায় (৫৮)। ট্যাংরার এই বাসিন্দার মৃত্যু হয় তালতলার জিডি হসপিটালে। কয়েকদিন আগে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নর্থ ব্যারাকপুরের এক প্রবীণের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম সুভাষ সমাদ্দার (৬০)। কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। প্রথমে তাকে ব্যারাকপুরে বিএন বোস হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়।এই তিনটি মৃত্যু নিয়ে ডেঙ্গুতে গত চার দিনে মোট পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।