দৈনিক সুন্দরবন ডেস্ক
ক্রমশ মহামারির আকার নেওয়া করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় মঙ্গলবার রাত ৮টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই ভাষণে তিনি জানিয়েছেন, এই মারণ ভাইরাস প্রতিরোধে ২৫ মার্চ রাত ১২ টা থেকে গোটা দেশেই লকডাউন চালু করা হবে। আগামী ২১ দিন ধরে এই লকডাউন চলবে। অর্থাৎ অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাগুলি ছাড়া ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাকি সব বন্ধ থাকবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে মঙ্গলবার জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই লকডাউন চলাকালীন কি কি পরিষেবা পাওয়া যাবে। লকডাউন থেকে যেগুলি মুক্ত থাকবে তার তালিকা নিচে উল্লেখ করা হল।
যেগুলি লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে:
১. হাসপাতাল এবং অন্যান্য মেডিকেল প্রতিষ্ঠান।
২. খাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী, ফল, সব্জি, দুধ সহ রেশন দোকান।
৩. ব্যাঙ্ক, বিমা অফিস এবং এটিএম।
৪. প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া।
৫. ই-কমার্সের মাধ্যমে মেডিকেল ইকুইপমেন্ট, ওষুধ, খাবার সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ডেলিভারি।
৬. পেট্রোল পাম্প, এলপিজি, পেট্রোলিয়াম এবং গ্যাস রিটেল ও স্টোরেজ আউটলেট।
৭. পুলিশ, হোমগার্ড, সিভিল ডিফেন্স, দমকল এবং আপৎকালীন পরিষেবা, বিপর্যয় মোকাবিলা এবং প্রিজন।
৮. বিদ্যুৎ জল এবং স্যানিটেশন।
৯. মিউনিসিপ্যাল বডি- কেবলমাত্র স্যানিটেশন, পার্সোনেল এবং জল সরবরাহের মতো কাজের সঙ্গে যুক্ত স্টাফকে উপস্থিত হতে হবে।
১০. শেষকৃত্যের ক্ষেত্রে অনুর্ধ্ব-২০ জনকে জড়ো হওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
১১. লকডাউনের কারণে আটকে যাওয়া জনগণ এবং পর্যটকদের আশ্রয় প্রদানকারী হোটেল, লজ, মোটেল এবং হোমস্টে।
১২. টেলিকমিউনিকেশন, ইন্টারনেট পরিষেবা, সম্প্রচার এবং কেবল সার্ভিস, আইটি এবং আইটি সমর্থিত ক্ষেত্রগুলিতে যতদিন সম্ভব ওয়ার্ক ফ্রম হোম সুবিধা বেছে নিতে হবে।
১৩. বিদ্যুৎ উৎপাদন, ট্রান্সমিশন, ডিস্ট্রিবিউশন ইউনিট এবং পরিষেবা।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া দ্বারা বিজ্ঞাপিত ক্যাপিটাল এবং ডেট মার্কেটের পরিষেবা।
যা বন্ধ থাকবে:
১. ভারত সরকারের অফিস, এটির অটোনমাস/সাবঅর্ডিনেট অফিস এবং পাবলিক কর্পোরেশন।
২. বিমান, রেল এবং সড়কপথ – সমস্ত পরিবহণ পরিষেবা।
৩. সমস্ত শিক্ষামূলক, ট্রেনিং, রিসার্চ এবং কোচিং ইন্সটিটিউট।
৪. হসপিটালিটি সার্ভিস।
৫. ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টাব্লিশমেন্ট।
করোনা-সঙ্কট
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস ঘিরে ভারত সহ গোটা বিশ্বের পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে। সমগ্র বিশ্বে এই মারণ ভাইরাসে ইতিমধ্যে ১৬,০০০-এরও অধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ। চিন থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছিল। পরে ধীরে ধীরে তা বিশ্বের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। চিনে এই ভাইরাসে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে এর থেকেও বেশি মৃত্যু (৫০০০+) হয়েছে ইতালিতে। এছাড়া স্পেন ও ইরানেও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। করোনাভাইরাস বা কোভিড ১৯-এর মোকাবিলা একটি শক্ত কাজ। কারণ এই নভেল বা নতুন ভাইরাসের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এর ভ্যাকসিনেশন তৈরির জন্য বর্তমানে ল্যাবে খেটে চলেছেন বিশ্বের তাবড় তাবড় চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা। তবে তারা জানিয়েছেন, সাবধানতা অবলম্বন করলেও এই ভাইরাসকে পরাজিত করা যেতে পারে।